গাকৃবিতে সামুদ্রিক মাছ নিয়ে কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠিত।
![]() |
![]() |
![]() |
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) অনুষ্ঠিত হলো “সামুদ্রিক মাছ থেকে মূল্য সংযোজিত মৎস্য পণ্য উৎপাদন, স্থায়ীত্বকাল বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিকীকরণ” বিষয়ক এক বিশেষ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের আয়োজনে এবং মৎস্য অধিদপ্তর, ঢাকা এর অধীন সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের অর্থায়নে কর্মশালাটি আজ ৮ অক্টোবর (বুধবার) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার প্রধান লক্ষ্য ছিল সামুদ্রিক মাছের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর, মূল্য সংযোজিত মৎস্য পণ্য তৈরির কৌশল ও উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করা। বিশেষ করে সামুদ্রিক ম্যাকারেল মাছ থেকে বার্গার ও টুনা মাছ থেকে আচার তৈরি করে কীভাবে মৎস্য পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অর্জন, দেশিয় উদ্যোক্তা তৈরি এবং উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে তার নিরিখে এ কর্মশালার আয়োজন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। গাজীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম মনির এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাকৃবির প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ এবং মৎস্য অধিদপ্তর, ঢাকা এর গ্র্যান্ট ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট মোঃ আমিনুল ইসলাম। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং এ প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. মোঃ গোলাম রসুল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত উদ্যোক্তাবৃন্দসহ ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। এছাড়াও গবেষক, মৎস্য উদ্যোক্তা এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থিত সকলের এক প্রাণবন্ত পরিচিতি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। পরে স্বাগত বক্তব্য এবং গবেষণার মূল প্রবন্ধের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপস্থাপনা তুলে ধরেন ড. রসুল। তিনি তাঁর প্রবন্ধে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তি, সংরক্ষণ পদ্ধতি এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। এ সময় তিনি সামুদ্রিক ম্যাকারেল মাছ থেকে তৈরি বার্গার এবং টুনা মাছ থেকে আচার তৈরির পদ্ধতিসহ বাস্তবভিত্তিক সচিত্র আলোচনা উপস্থাপন করেন। পরে আমন্ত্রিত অতিথি এবং উদ্যোক্তাবৃন্দের জন্য এক উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়। প্রশ্নোত্তর পর্বে উদ্যোক্তা ও গবেষকবৃন্দের সুচিন্তিত মতামত কর্মশালাকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলে। এ সময় সমুদ্র সম্পদের বাস্তবভিত্তিক নানা চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা এবং প্রযুক্তিগত দিকের উল্লেখ করে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, “বাংলাদেশের বিশাল সামুদ্রিক জলসীমা এক অনন্য সম্ভাবনার ভাÐার। এ সম্পদকে বিজ্ঞানসম্মত ও প্রযুক্তিনির্ভরভাবে কাজে লাগিয়ে দেশে এক নতুন ‘বøু-ইকোনমি’ গড়ে তোলা সম্ভব। গবেষণা, উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা বিকাশের সমন্বিত প্রয়াসই হতে পারে এই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি।” তিনি আরও বলেন, “শুধু মাছ ধরা নয়, বরং মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ, মান নিয়ন্ত্রণ, ব্র্যান্ডিং ও রপ্তানিমুখী পরিকল্পনাই হতে পারে ভবিষ্যৎ মৎস্যখাতের চালিকাশক্তি। এ ক্ষেত্রে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত।” সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মধ্যদিয়ে কর্মশালার সমাপ্তি ঘটে। এ ধরনের কর্মশালার মাধ্যমে গবেষণা, বাস্তব প্রয়োগ এবং বাণিজ্যিক উদ্যোগের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপস্থিতগণ।